শুদ্ধেন্দু চক্রবর্তী


নিশ্চয়ই এমন নামকরণে আশ্চর্যচকিত হয়ে গেলেন!এই অতিমারীর ভয়াবহতা,মৃত্যু,অনিশ্চয়তা ও রাজনীতি।তার মধ্যে সুরমূর্ছনা কি নেহাতই বেমানান নয়?এমন ভাবনা যুক্তিসঙ্গত।ঠিক এক শতাব্দী আগে ফিরে যাই চলুন।করোনার থেকেও ভয়াবহ স্প্যানিশ ফ্লু অতিমারী ।পৃথিবী সবেমাত্র প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সামলে উঠেছে।মাত্র দুবছরের অতিমারী পৃথিবীর বুক থেকে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষকে নিশ্চিহ্ন করে দিল।সেই ভয়াবহতাতেও ছিল সুরমূর্ছনা!অবাক হচ্ছেন?চলুন তবে ফিরে যাই সে সময়ে।

অতিমারীর সঙ্গে সঙ্গীতের সম্পর্ক সুপ্রাচীন।আসলে মানুষের অবচেতনের কম্পাঙ্কের সঙ্গে সঙ্গীতের তাল,লয়,সুরের একটি গভীর সম্পর্ক আছে।সেই সম্পর্কের আঁচ পেয়েই মনোবিদরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেসে ভুগতে থাকা সৈন্যদের মোজার্ট শোনাতেন।তাতে ফলও হতো বেশ।মনোচাঞ্চল্য কমে আসতো,অবসাদ কেটে যেত।বৈজ্ঞানিকরা এর নাম দিলেন "মোৎজার্ট এফেক্ট"।বিশ্বযুদ্ধও তো আসলে মানুষের তৈরি একধরণের অতিমারীই।খ্রিস্টপূর্ব সাতশো সালে স্পার্টা শহরে দেখা দিল প্লেগ।তৎকালীন চিকিৎসকদের হাতে সে রোগের উত্তর ছিল না।শহরপ্রধান ডেকে আনলেন কবি থালেটাসকে।থালেটাস শহরের মধ্যে তার গান শোনাতে লাগলেন।গ্রীসের আরেক শহর লেসবসেও এমন অসুখ ধরা পড়লে ডাক পড়ল আরেক কবিগায়ক তারপেন্ডরের।রোমে এর অনেকবছর পর রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে মানুষ মিছিল করে গান করতে করতে হেঁটে যেতেন শহরের পথ দিয়ে।শহরবাসী তার নাম দিয়েছেন "প্লেগ প্রসেশন"।তাই অতিমারীর সঙ্গে সঙ্গীতের যোগাযোগ রয়েছে সুপ্রাচীন কাল থেকেই।সমালোচক ম্যাকলিন সে কথা ভেবেই হয়তো বলেছেন,"মহামারীর অনিশ্চয়তার সময় সঙ্গীত বিলাশবিনোদন নয়,প্রয়োজনীয় একটি উপাদান।"

একশো বছর আগে ফিরে যাই আবার।স্প্যানিশ ফ্লুর সেই ভয়াবহতার দিনগুলিতে।স্প্যানিশ ফ্লুতে "স্প্যানিশ" নামটা কিন্তু ভুল।আসলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ(১৯১৪-১৯১৮) শেষ হবার পর আমেরিকা থেকে একটি সেনাপল্টন পাড়ি দিল ইয়ুরোপের উদ্দেশ্যে।সেই সেনাপল্টনের মূখ্যপাচক অ্যালবার্ট গিচেল প্রথম রোগে আক্রান্ত হয়।একে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় "ইনডেক্স কেস"।এদিকে ইয়ুরোপে তখনও বিশ্বযুদ্ধপরবর্তী সংবাদমাধ্যমের ওপর বিধিনিষেধ চলছে।তাই ইংল্যান্ড,ফ্রান্স বা ইতালিতে অল্পবিস্তর এই রোগ ছড়িয়ে পড়লেও তা কোনও দেশের খবরেই প্রকাশিত হলো না।এরপর রোগ ছড়িয়ে পড়ল স্পেনে।স্পেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কোনও পক্ষ নেয়নি।তাই সেই দেশের সংবাদপত্রে বিধিনিষেধ ছিল না।স্পেনের একটি কাগজ এই রোগের খবর প্রথম প্রকাশ করলো "ফ্লু" হিসেবে।সারা বিশ্ব তারপর থেকেই এর নাম দিয়ে দিল "স্প্যানিশ ফ্লু"।এই স্প্যানিশ ফ্লুপরবর্তী সময় বিশ্বসাহিত্যকে একদিকে যেমন "ওয়েস্টল্যান্ড"এর অমূল্যরতন উপহার দিয়েছে,অন্যদিকে তেমনই তা বিশ্বসঙ্গীতসম্ভারকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলেছে কিছু যুগান্তকারী কম্পোজিশনের মাধ্যমে।দেখে নিই।প্রথমেই বলে রাখি,ইলিয়টের "ওয়েস্টল্যান্ড"এর মতোই এই সুরগুলিতেও অদ্ভুত আধুনিকতার ছোঁয়া ছিল।প্রথাগত চার্চ অনুগত নিছক প্রার্থনাসঙ্গীতের ধারা বা "গসপেল" রীতি ভেঙে এই গানগুলি হয়ে ওঠে অনেকটাই বাস্তবমুখী।কিছুকিছু ক্ষেত্রে নাস্তিকতা বা ঈশ্বরবিরোধিতাও গোপন থাকেনি।সুইজারল্যান্ডের স্ত্রাভিন্সকি যখন তার "দ্য ফায়ারবার্ড স্যুট"(ল হিস্তয়ের দু সোলদাত) তৈরি করছেন,তখন একই সঙ্গে অতিমারী আর রাশিয়ার বলসেভিক আন্দোলনের ভ্রুকুটি সুইজারল্যান্ড পৌছেচে।তাই ল্যুসানে যখন প্রথম তা বাজানো হলো,শুনে লোকে চমকে উঠলো।চোখ বন্ধ করলেই শ্রোতা দেখতে পেলেন মৃত্যুমিছিল অনিশ্চয়তা ও অতিমারীর ভয়াবহতা।সার্গেই রাশমানিনভ আরেকজন তেমনই সঙ্গীতশিল্পী ছিলেন যিনি পালিয়ে এসেছিলেন রাশিয়ার আন্দোলনের হল্কা থেকে।তারপর তিনি ফ্লু আক্রান্ত হয়ে পড়লেন।এরপর সুস্থ হয়ে তিনি বাজালেন "দ্য স্টার স্প্যাঙ্গলড ব্যানার"।এখানেও তার মনের ভিতরে জমতে থাকা অস্থিরতা গোপন রইলো না।ইতালির ওত্তোরিনো রেসফিগির অর্কেস্ট্রাতে আবার আরেক কিংবদন্তি শিল্পী গিয়াচিনো রোসিনির যুগলবন্দিতে ফিরে এল "ওয়াল্টজ" এর ব্যবহার।গানের সঙ্গে নর্তকনর্তকী ঘুরে ঘুরে একই জায়গায় ফিরে আসা ও তার সঙ্গে পিয়ানোর ঝঙ্কার যেন মনে করিয়ে দিল শ্রোতাকে কীভাবে অতিমারী ও বিশ্বযুদ্ধ সত্ত্বেও পৃথিবীর মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।তবে কী আতঙ্ক থেকে সঙ্গীত ক্রমশ  শুশ্রুষার পথ ধরে নিল!ফরাসী সুরকার দারিয়াস মিলহঁ যেমন "দোলোরোঁ"র অপেরার শেষে কফিনের সারির শেষে ফিরিয়ে আনলেন পুনরুত্থানের স্মৃতি।অথবা আমেরিকার সুরকার চার্লস টমলিনসন গ্রিফারের পিয়ানোর তিনটি অংশ যেমন।১৯২০ সালে মাত্র পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে ফ্লুসংক্রমণ তার জীবন কেড়ে নিল।কিন্তু তার আগেই তিন তার পিয়ানোয় এনেছেন সংকট,উত্তাল অনিশ্চয়তা ও উত্তরণ।প্রোকোফিয়েভ,বারটকের মতো সুরকারদের এইসময়কার সঙ্গীতেও স্পষ্ট হয়ে ওঠে অতিমারীর ভয়াবহতা।তার কতোটুকু প্রকাশ আর কতোটুকু শুশ্রূষা এ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা ও বিতর্ক চলতেই পারে।

সাম্প্রতিক কোভিড সংক্রমণ অতিমারী সেই ব্যালকনি কনসার্টের স্মৃতি আবার নতুন করে যেন ফিরিয়ে আনলো।ইউহানের বড় বড় অট্টালিকার পায়রাখোপের মতো জানলায় মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখা অসংখ্য মানুষের সুর করে একসঙ্গে বলে ওঠা "ইউহান জিয়াওঁ"(শক্ত হও ইউহান) তো একধরণের সঙ্গীতই।প্যানডেমিক পপ মনে করে দিচ্ছে বিগ বিলি ব্রুনজির "নিউমোনিয়া ব্লুজ" এর কথা(১৯২৯-১৯৩৬)।তেমনই আমার পছন্দ করা বাছাই পাঁচটি গানের কথা বলি যা আমার কাছে কোয়ারেন্টাইন আইসোলেশন লকডাউন আর অতিমারীর সময় শুশ্রূষার কাজ করেছে।এই বাছাই একান্তই আমার নিজস্ব।আর কেন এই বাছাই তার একধরণের নিজস্ব কারণসন্ধান করবার চেষ্টাও করছি এখন।পাঠককে অনুরোধ,এই ধারা চলতেই পারে।চললেই তো প্রবহমানতা ।

ধরে নেওয়া যাক ১৯৬৮ সালে প্রথম তৈরি হয়ে থাকা একটি গান।তখন পৃথিবীজুড়ে আরেক অতিমারী শুরু হয়েছে।দশ লক্ষ মানুষ মাত্র দুই বছরে সাবাড় করেছে হংকং ফ্লু(১৯৬৮-১৯৭০)।গানের পটভূমির সঙ্গে অবশ্য সরাসরি তার কোনও সম্পর্ক নেই।গানের দলটি তখন দুনিয়া কাঁপানো রাজত্বের পর ক্রমশ ভেঙে যাচ্ছে।গানের কথাকার রাতে স্বপ্ন দেখলেন তার মা তাকে বলছেন,"সব ঠিক হয়ে যাবে"।গানটি আকার নিল প্রার্থনা সঙ্গীতের।১৯৬৯,৩রা জানুয়ারি প্রথম কনসার্টে সেই গান শুনে মানুষের চোখে জল ছলছল।বিখ্যাত সেই গানটির নাম "লেট ইট বি"(হতে দাও)।গানের রচয়িতা পল ম্যাককার্টনি।দলের নাম "দ্য সিলভার বিটলস"।সেই দলের চারমূর্তি জন লেনন,পল ম্যাককার্টনি,জর্জ হ্যারিসন ও রিঙ্গো স্টার।গানটি গ্রামি ছাড়াও বহু পুরস্কার পায়।এই সময়ে কেন এই গানটি মনে পড়ল?তার প্রথম কারণ,গানটির কথা।মা মেরি ঠিক যেন তার সন্তানের কপালে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।বলছেন,যা হয়েছে হয়েছে,সব ঠিক হয়ে যাবে।গানের সুরে অদ্ভুত লাফ আছে।খাদ থেকে হঠাৎ চড়াইয়ে উঠেই আবার শান্ত হয়ে পড়ে তার চলন।তার কম্পাঙ্ক অনুসরণ করলে আতঙ্কগ্রস্ত মন হঠাৎ চঞ্চল হয়েই যেন গানের সাথেই শান্ত হয়ে ওঠে।গানের আলাদা করে খুব জোর ড্রামের ব্যবহার নেই।বরং হাল্কা দুলকি চালে চলতে চলতে হঠাৎ গিটারের মূর্ছনায় জীবন পথ খুঁজে পায়।ঠিক যেন আনলক এক দশমিক শূন্যর সময়কার আমাদের এই জীবন।

আরেকটু আগেকার একটি গানে ফিরে যাই।গম্ভীর সেই মাদকতা মেশানো গলায় কী ছিল কে জানে।১৯৬১ সাল।"ব্লু হাওয়াই" অ্যালবামের এই গানটি টানা বেশ কয়েক জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল।গায়কের নাম এলভিস প্রেসলি।গানটির নাম  "কান্ট হেল্প ফলিং ইন লাভ ইউথ ইউ"।ভালোবাসার এতো আবেগঘন গান পৃথিবীর ইতিহাসে খুব কম আছে বলে আমার ধারণা।এই গানে আছে নদীর মতোই চিরন্তন প্রবহমানতার কথা।মন্দ্র চলন।এই ফাঁকে একটা তত্ত্ব শেয়ার করে নিই।যারা সঙ্গীতের পথ্যপ্রয়োগ করেন,তারা এই মূল সত্য মেনে চলেন।যে মানুষের হৃদস্পন্দনের গতি যতোটা,গানের চলন যদি তার থেকে ধীরে হয়,তাহলে সেই গান সেই মানুষটির কাছে শান্তি এনে দেবে।তার মনের অস্থিরতা কমিয়ে আসবে।এই গানের বেশিরভাগ চলনই নিম্ন মধ্যমে।এখানে সূত্র।উচ্চ কম্পাঙ্কের গান,যেমন সাইকেডেলিক সঙ্গীত যেমন মনকে অস্থির করে তোলে,নিম্ন কম্পাঙ্কের গানগুলি ঠিক তেমনই মনকে স্থিরতা দেয়।হয়তো সেই কারণেই ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ভৈরবী রাগ অস্থির মন উপশমের ক্ষেত্রে এতো জনপ্রিয় ।

ভারতীয় সঙ্গীতের কথাই যখন এল,তখন সমর্পন করি সেই সুরসম্রাটের কাছে যিনি ছাড়া বাংলা গানের সম্ভার অসম্পূর্ণ।সেই মানুষটি অবশ্যই আমাদের কাজিসাহেব।কিন্তু নজরুল ইসলামের যেসব গান আমরা শুনতে অভ্যস্ত তার তুলনায় আমি যে গানটি বলবো,তা অনেকটাই অপরিচিত।গানটির চলনও বেশ অভিনব।খানিকটা যেন রাগ বাগেশ্রীর চলন।কিন্তু মধ্যরাগে এর বিস্তার।সবচেয়ে চমকপ্রদ এর সুরবিস্তার।একই স্থায়িত্বে গানটি উপরের ও নীচের মধ্যম স্পর্শ করছে।গানের তাল দাদরা।কিন্তু তার লয় মধ্য।দুলকি চালে মন্দ্র গতিতে যেন সুর মূর্ছনা হয়ে লুটিয়ে পড়ছে।আরও সুন্দর গানের কথাগুলি।"একটুখানি দাও অবসর বসতে কাছে"।এই গানের অন্তরার কথাগুলি যেন বেদনার মরুভূমে এক সুপ্ত মরূদ্যান।"গ্রহ ঘিরে উপগ্রহ যেমন ঘোরে অহরহ,আমার আকুল এই বিরহ তেমনই করেই তোমায় যাচে"।"তোমায় যাচে" তে গানের সুর আবার স্থায়ীর গান্ধারে ফিরিয়ে দেয় শ্রোতাকে।এই উত্তরণ জীবনের উত্তরণের কথা মনে করিয়ে দেয়।

অবশ্য গানের কথাই যেখানে প্রধান সেখানে আমার আরও একটি পছন্দের গানের কথায় আসি যা এই সময়ে খুব উপযুক্ত।আবার ফিরে যাই রবীন্দ্রনাথে।এই গানের আধার ভৈরবী রাগ।আগেই বলেছি মনের অস্থিরতা কাটাতে এই রাগের জনপ্রিয়তা ইতিমধ্যেই অজানা নেই।গানের তালটি কবি নিজে তৈরী করেন।ষোলো মাত্রাকে চার ভাগে সমানভাবে বিন্যস্ত করে তৈরি হয় এই তাল।নাম মধ্যমান।গানটি যদিও প্রকৃতি পর্যায়ের,কিন্তু আসলে এই গান একটা আশার কথা বলে,বলে আশ্রয়ের কথা।সেই আশ্রয় যা আমাদের সমস্ত বিপদ কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।গানটির স্থায়ী "বন্ধু রহো সাথে।আজি এ সঘন শ্রাবণপ্রাতে।"পরবর্তীতেই আছে সেই অনুসন্ধান।পবিত্র সংশয়।"ছিলে কি মোর স্বপনে এই সাথীহারা রাতে"।এই 'প্রাতে'র পরেই 'রাতে'র ব্যবহার একমাত্র রবীন্দ্রনাথের পক্ষেই সম্ভব।বিশেষত যিনি "চিরশখা হে" বলবার পরেই বলতে পারেন "ছেড়ো না মোরে"।এই গান সংকট কাটিয়ে ওঠবার গান।গানের চলন টপ্পা অঙ্গের হওয়ায় এখানেও মৃদু মন্দ্র গতি মনের মধ্যে বিশ্বাস আর স্থিরতার জন্ম দেয়।অবশ্য এমন অনেক গানই রবীন্দ্রসঙ্গীত ভান্ডারে আছে।এ তো নেহাত আমার পক্ষপাতিত্ব ।

সবশেষে আসি এক রাগের কথা।সেই রাগের প্রয়োগের কথা বলেই এই আলোচনার ইতি টানছি আপাতত।এই রাগের গায়নসময় প্রাচীন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের নিয়মানুযায়ী দিনের দ্বিতীয় প্রহর।উৎপত্তি বিলাবল ঠাট থেকে।বিলাবল সেই রাগ যেখানে সবকটি স্বর শুদ্ধ।সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো এই রাগে আরোহে যে স্বর পাঁচটি ব্যবহৃত হয় সেখানে ঋষভ আর পঞ্চম নেই।এই স্বরাভাব একধরণের লম্ফন তৈরি করে যে লম্ফনের কথা প্রথম গানটির ক্ষেত্রেও বলেছিলাম।এই রাগের আগের নাম ছিল "ভীন সরজ"।পরবর্তীতে এই রাগ কৌষিকধ্বনি নামে জনপ্রিয়তা পায়।এই রাগের চলনে এক অদ্ভুত জীবনীশক্তি  আছে।সেই শক্তি যে কোনও সংকট কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।এই রাগের বাদী স্বর সরজ।সমবাদী মধ্যম।এই সূত্রে সামান্য মিল আছে বাগেশ্রীর সঙ্গেও।কিন্তু বাগেশ্রীর বিরহ কৌষিকধ্বনিতে নেই।বরং জয়জয়ন্তীর মতোই এই রাগ জীবন্ত হওয়ায় এই কঠিন সময়ে আমার কাছে এই সুর প্রিয়তম হয়ে উঠেছে।

তালিকা যেমনটাই হোক,সঙ্গীতের থেকে বড় উপশম মনস্তাত্ত্বিকভাবে এই বিপন্ন সময়ে আর কিছুই হতে পারে না।তাই এই কোভিড অতিমারী রুখতে চলুন আমরা আবার সপ্তসুর পুনরাবিষ্কারের পথে হাঁটতে থাকি একসাথে।

Comments

পাঠকের পছন্দ