সম্পাদকীয়

দেখতে দেখতে নিউ ইয়ার। দেখতে দেখতে নববর্ষ। অথচ এখন ঘরের ভেতরে হাহাকারে মুখ ডুবিয়ে ক্লান্তি ঝরাচ্ছে সমগ্র বিশ্ব। প্রশ্বাসই যদি ফিকে হয়ে আসে, তবে তুমি চেঁচাবে কীভাবে? বাইরে সর্বত্র সতর্কতা ছড়িয়ে টহল দিচ্ছে পুলিশ। আর ঘরের ভেতরে অনিশ্চয়তায় বুঁদ হয়ে আছে জনজীবন। কেউ কেউ অনন্ত ছুটির মতো উপভোগ করছে পুরো ব্যাপারটা। আবার কেউ কেউ বুঝে উঠতে পারছে না, আজ খাওয়া হলে কাল কী খাবে! এদিকে প্রতিদিন বেড়ে চলেছে করোনা-আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা, বেড়ে চলেছে মৃত্যু, ত্রাস। সারাদিনের ব্যস্ততাময় এলাকাগুলোও এখন একেবারে শূন্যতায় ভিজে নির্জন হয়ে আছে। এরকম অবস্থায় ইচ্ছে হচ্ছিল যে, সকলে তাদের নিজেদের অনুভূতির কথা লিখুক। সকলকে পড়াক, জানাক। এরকম বেশ কিছু লেখা একত্রে নিয়ে একটা নতুন ওয়েবজিন প্রকাশ করলে মন্দ হয় না ব্যাপারটা-- ভাবতে ভাবতেই ঘটে গেল পুরো বিষয়টা। শুভদীপকে বলতেই রাজি হয়ে গেল। নিজেই লেখার আহ্বান করলাম অনেকের কাছেই। লেখাও পেয়ে গেলাম বেশ কিছু। আবার অনেকেই লেখা দিয়ে উঠতে পারলেন না আপাতত। বেশ। যা আছে, সেটাই সম্বল। সেটাই যথেষ্ট। কারণ, লেখা তো ঐশ্বরিক অনুরণন! যার কলমে আসবে সে-ই তো লিখবে! না এলে লিখবে কী করে কেউ! লেখাগুলোকে অন্যান্য ছাপা-পত্রিকা বা ওয়েবজিনগুলোর মতো কবিতা-গদ্য-গল্প ইত্যাদি আলাদা আলাদা বিভাগে সাজানো হল না ইচ্ছে করেই। এত গোছানো কাজ না-ই বা হল আমার! 'তা বলে কি প্রেম দেবে না'? এলোমেলো করেই ছড়িয়ে দেওয়া হল ভালোবাসার বীজ। অগ্রজ, অনুজ, যাদের লেখা পেলাম তাদের সকলকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই। কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালীন এই বন্দিদশা নিয়ে আস্ত একটা সংখ্যা প্রকাশ করা আমার মতো আনকোরার পক্ষে কম ঝক্কির ঘটনা নয়। এই সংখ্যাটি প্রকাশের কিছু পূর্বাপর ঘটনাও আছে বৈকি। সেসব কথা এখন থাক আপাতত। আর দৈব-সংযোগটি হল এখন বৈশাখ মাস, আর এই কবিপক্ষে কবির আবির্ভাবের দিন অর্থাৎ ২৫ শে বৈশাখকেই বেছে নেওয়া হল প্রথম সংখ্যাটির সূচনাকাল হিসেবে। তবে দায়িত্ব বেড়ে গেল, কারণ, আমি আর শুভদীপ মিলে ঠিক করেছি, এবার থেকে প্রতি মাসে একটি করে কবিতা/সাহিত্যের একটি করে নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক বা সাধারণ সংখ্যা প্রকাশ করবে 'পান্থজন'! আর এই 'কোয়ারেন্টাইন সংখ্যা' হল সেই কর্মসূচির হাতেখড়ি-- আত্মপ্রকাশ...


গৌরব চক্রবর্তী

Comments

পাঠকের পছন্দ