অন্বেষা কুন্ডু


ময়টা আশির দশকবাংলা গান থেকে ক্রমশ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে তরুণ প্রজন্মএই মুখ ফেরানোর পশ্চাতে নানাবিধ কারণ যে ছিল না, তা নয়এই বাঙালীই যেসময় সলিল চৌধুরী এবং তাঁর সমসাময়িক সঙ্গীত শিল্পীদের ঘরানায় পৌছোয় সেখানে সৃষ্টি হয়েছিল কয়্যারের, সেখানে যুক্ত হয়েছিল গণসঙ্গীতকিন্তু এর পরবর্তীতে আশির দশকে বাঙালীর সঙ্গীত রসবোধ মোড় নেয় অন্যত্র, তা মূলত পৌছে যায় বলিউডের বাণিজ্যকেন্দ্রিক হিন্দি গানের ঘরানায়আধুনিক বাংলা গানের যে প্রসার এবং প্রচার ঘটে, তা মূলত ছিল কন্ঠশিল্পীকেন্দ্রিককন্ঠশিল্পীর প্রাধান্যভিত্তিক এক ধরণের সঙ্গীত সংস্কৃতি বাঙালির মননে গেঁথে গিয়েছিলএক্ষেত্রে সুরকারদের প্রাধান্য কিছুক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হলেও গীতিকারদের প্রাধান্য বা গুরুত্ব আশ্চর্যজনকভাবে অবলুপ্তির পথে ছিলএর সামান্য অতীতেই অবশ্য এই অবস্থার বিপরীতাবস্থা বিরাজমান ছিলঅতীতের গানের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় সেখানে কবিরাই মূলত গান তৈরি করেছেনরবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে নজরুল, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় প্রমুখের গানের আমাদের হৃদয় আবেগে বিচলিত হলেও তাঁদের কবিসত্তাটিই হয়ত অধিক নিকটতম হয়ে ওঠেকিন্তু আধুনিক বাংলা গানের শুরুতেই এই চিত্র বদলে গেলগীতিকার, সুরকার সকলকে পেছনে ফেলে গানের ঐশ্বর্যের পথে এগিয়ে চললেন একলা কন্ঠশিল্পীএই পালাদল ঘটল নয়ের দশকে, জীবনমুখী গানের হাত ধরেকিন্তু অনতিলম্বে এই পালাবদলের ইতিবৃত্তে যুক্ত হল বাংলা গানের এক নবতম আঙ্গিক : বাংলা ব্যান্ডমূলত সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ের আধুনিক বাংলা গানের জগতে প্রথম বাংলা ব্যান্ড 'মহীনের ঘোড়াগুলি' আগমণ জীবনানন্দ দাশের 'ঘোড়া' কবিতা থেকে সাতজনের একটি দল মিলে নতুন ধারার গানের পথে পা এগোলেন, দলের নাম দিলেন 'মহীনের ঘোড়াগুলি' প্রথমে 'সপ্তর্ষি' নামটি ব্যবহার করা হলেও তারপরে স্থির নাম আসে 'মহীনের ঘোড়াগুলি' যে নাম আজও আমাদের মনে শিহরণ জোগায়সেইসময়ে বিশ্বজুড়ে সাহিত্যে, সংস্কৃতিতে, শিল্পে, সঙ্গীতে শুরু হয়েছিল নতুন ভিন্নধারার সৃজনশীল এবং পরিবর্তনমুখী কাজ 'দ্য বিটলস', 'দ্য ঈগলস', 'গানস অ্যান'রোজেস', 'পিংক ফ্লয়েড', 'স্পাইস গার্লস', 'দ্য এভারলি ব্রাদার্স ', 'ওয়েসিস', 'এন সিঙ্ক ' -- বিশ্ববিখ্যাত এসকল ব্যান্ড  এবং বব ডিলানের পাশাপাশি জিম মরিসনদের সঙ্গীত দ্বারা তারা এতটাই অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন যে সেই ঘরানার গানেই শিহরণ জাগাতে চেয়েছিলেন তরুণ প্রজন্মের শরীর এবং মনেতাদের গানে উঠে এসেছিল নাগরিক জীবনের প্রতিচ্ছবি আর নগর মানুষের অনুভূতিগৌতম চট্টোপাধ্যায় অর্থাৎ মণিদার হাত ধরে সত্তরের দশকে 'মহীনের ঘোড়াগুলি' যে লড়াইয়ের ময়দানে পা রেখেছিল, নব্বইয়ের দশকে একগুচ্ছ গায়ক এবং ব্যান্ডের হাত ধরে বাংলা গান সেই পূর্ণতা পায়
 সত্তরের দশকের শেষ, বাঙালির জীবনে পরিবর্তন ঘটে গেল এক সাংস্কৃতিক আবহেরবাংলা গানের ধারাকেই বদলে দিলেন গৌতম চট্টোপাধ্যায় নাকতলার একটি বাড়িতে শুরু হল ড্রামস - গিটার বাজিয়ে গানেত দাপাদাপি, এই দাপাদাপি চলত মধ্যরাত ধরেমণিদার কথায়, গানের রিহার্সালের আদর্শ ক্ষণ হল এই মধ্যরাতকিছুদিনের মাথাতে একজন প্রতিবেশি সেই বাড়িটির পাঁচিলে লিখে দিয়ে গেলেন 'আস্তাবল'লেখাটিকে মণিদা কমপ্লিমেন্ট হিসেবেই গ্রহণ করলেন এবং লেখাটি মোছা হল না সেই দেওয়াল থেকে,থেকে গেল সেভাবেইবাংলার প্রথম ব্যান্ডের তো কমপ্লিমেন্টই বটেএর কিছুদিন পরেই বাংলার ধারাবাহিক সঙ্গীতের যে পালাবদলের পালা, নতুনভাবে গর্জে ওঠার পালাবাংলা আধুনিক গানের বীজ রোপণ করা হবে এই ব্যান্ডের হাত ধরে, আসবে বিপ্লব
নতুন বাংলা গান পেল নিজস্ব আইকনকে, পেল গৌতম চট্টোপাধ্যায়কেছেলেবেলা থেকেই তিনি বড়ো হয়ে ওঠেন  সঙ্গীতময় পরিবেশের মধ্য দিয়েপ্রেসিডেন্সিতে বিএসসি শেষে, ষাটের দশকের শেষ পর্যায়ে মণিদা যোগ দেন নকশাল কৃষক ফ্রন্টেএইসময়ই তিনি আত্মস্থ করেন কৃষকদের গান, নবান্নের গান'মহীনের ঘোড়াগুলি' বহু গানেই এই অভিজ্ঞতার ছাপ স্পষ্টগানের  প্রিলিউড-ইন্টারলিউডে শোনা যাবে গরুকে ঘরে ফেরানোর বহু আওয়াজ, সেই আওয়াজ আবার মিশে যাবে অ্যাফ্রো-আমেরিকান ব্লুজের আবহেপ্রথম দিকেই যে ব্যান্ডের পরিবেশনায় ব্যাপক সাড়া মিলেছিল তা নয়, অবশ্য তা হবেই বা কী করে? সে সময়ের বাঙালি সমাজে যে তখনও হেমন্ত-মান্না ধারাই বহমান, সাংস্কৃতিক আবহে মানুষ তখন বেছে নেন পূর্বের ন্যায় শুধুই রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যাকেআর এদিকে কিছু জোয়ান ছেলেপিলে ড্রাম-গিটার বাজিয়ে কী গান নিয়ে যেন দাপাদাপি করে বেড়াচ্ছেদলের শো তখন খুব একটা মিলত না, তবে যখন আসত, যেখানে আসত, সেখানে এই ছেলেপিলেগুলো গানের মধ্য দিয়ে দর্শকদের মনে ধাক্কা দিয়ে যেতএকবার একটি মস্ত বড়ো শো হয় রবীন্দ্র সদনেতিনভাগে শো-টিকে সাজানো হয়, প্রথমভাগে ছিল অ্যাকোয়াস্টিক ইন্সট্রুমেন্ট, এর সঙ্গে প্লে করা হয়েছিল বাউল-সুফি-ভাটিয়ালির মেলোডিদ্বিতীয় ভাগে শোনা গিয়েছিল অখিলবন্ধু ঘোষ থেকে শচীনদেব বর্মণ পর্যন্ত পুরোনো গানের সফর আর অন্তিমে বাউল এবং জ্যাজ সংমিশ্রিত ইলেক্ট্রিক রকদড়ি আর বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল সেখানকার স্টেজক্রাফট, সেইসময়ের কলকাতা এহেন স্টেজক্রাফট প্রথমবারের ন্যায় দেখেছিলছোটোবেলা থেকেই জড়ো করা বেদের-বাউলের গান, একতারার সুর, মাঠে ধানকাটা, গরু চড়ানোর গানের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল আর্বান আধুনিক গান

এবারে আসা যাক প্রথম বাংলা গানের ব্যান্ড 'মহীনের ঘোড়াগুলি' বাংলা সাংস্কৃতিক জগতে পরিগ্রহণের কথায়এপ্রসঙ্গে বলতে হয়, যেকোনো গতানুগতিক ধারাবাহিকতা থেকে পালাবদলের কাজ নিতান্তই সময়সাপেক্ষকারণ, মানুষ বরাবরই পুরোনো অভ্যেসকে অধিক মান্যতা দেয় নতুনের চাইতে এমনটাই ঘটেছিল এক্ষেত্রেও ১৯৭৫ সালে মহীনের জন্ম হলেও প্রথম অ্যালবাম প্রকাশিত হয় ১৯৭৭ , অর্থাৎ এদিক থেকে দেখতে গেলে ১৯৭৭ সালকেই মহীনের আত্মপ্রকাশের বছর হিসেবে ধরা চলেপরপর তিন বছরে প্রকাশ পায় তিনটি অ্যালবামপ্রথমটি ছিল 'সংবিগ্ন পাখিকুল কলকাতা বিষয়ক' কিন্তু সেদিনের সেই পথ চলা এর চাইতে অধিক পথ অতিক্রম করতে পারেনিসময়ের থেকে অনেক এগিয়ে থাকা মহীনের গান সেদিনের বাংলা গানের শ্রোতার মনে আধুনিকতার মুখোশে ঢেকে রাখা মেকি রোম্যান্টিকতার মিথ্যাচার সরিয়ে নিজের জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হয়আত্মমগ্নতার মৌতাতে মজে থাকা নাগরিক এলিট সংস্কৃতির প্রতি ছিল আগুনে ভরা অনন্য প্রতিবাদের প্রকাশ :
'ভালোবাসি জ্যোৎস্নায় কাশবনে ছুটতে/ছায়া ঘেরা মেঠোপথে ভালোবাসি হাঁটতে/দূর পাহাড়ের গায়ে গোধূলির আলো মেখে/কাছে ডাকে ধানক্ষেত সবুজ দিগন্তে/তবুও কিছুই যেন/ ভালো যে লাগে না কেন/উদাসী পথের মাঝে মন পড়ে থাকে যেন/কোথায় রয়েছে ভাবি লুকিয়ে বিষাদ তবুও'
১৯৭৭ এই লিরিক্স, এই উচ্চারণ অথচ বাংলা গানের দুর্ভাগ্য ব্যতীত আর কী বলেই বা ব্যাখ্যা করা যায় মহীনেরএই ব্যর্থ হওয়ার ঘটনাকেসেসময় বাঙালির কি এতটাই সাংস্কৃতিকগত দিকে অপরিণত মন ছিল? উত্তরে দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়া আর কীই বা পাওয়া যাবেশুধু ভিন্নধারার ভাবনায় বা আদর্শের চর্চায় নয়, মহীন সেদিন তাদের গানে নিয়ে এসেছিল ব্যাতিক্রমী বিষয় প্রকাশভঙ্গি আর্বান এলিট কালচারের সঙ্গে মিশে যায় সেখানে মাঠের সুরপ্রেমের কী হৃদয়মোচড় দেওয়া ভাবনা সেখানে বর্তমান শুধুই সরল অভিব্যক্তি - তোমায় দিলাম
'শহরের উষ্ণতম দিনে/পিচগলা রোদ্দুরে/বৃষ্টি বিশ্বাস/তোমায় দিলাম আজ'
নগরকেন্দ্রিক ক্লান্ত মন ব্যর্থ হল দিতে ঘাসফুল আর ধানের গন্ধ, সেই স্নিগ্ধতা মেকি রোমান্টিকতার চাদরে জড়ানো গানগুলোর প্রতি চেতনার তীর ছুড়ে দিয়েছিল এই গান
 'আবার বছর কুড়ি পরে' অ্যালবামে লক্ষীছাড়া গাইল 'পড়াশোনায় জলাঞ্জলি'এতদিনে মহীন বাংলা সাংস্কৃতিক জগতে নিজের প্রভাববিস্তারে সফলতা লাভ করেছেগৌতম চট্টোপাধ্যায় এবং তাপস দাসের কথা সুরে এই গানটির সহজ সরল ভঙ্গি কথা সেদিন থেকে আজও সাড়া ফেলে আসছেইঁদুর দৌড়ের জীবনে খানিক মুক্ত বাতাস গ্রহণের আশ্বাস দেয় এই গানশোনা যায়, মণিদা মাত্র আট বছর বয়সে সম্পূর্ণ 'আবোল-তাবোল' মুখস্থ বলতে পারতেন, গানটিতে সুকুমার রায়ের বিদ্যেবোঝাই বাবুমশাইয়ের একটা আঙ্গিকগত সাযুজ্য লক্ষ করা যায়, যদিও বক্তব্যে মেলে যাবতীয় কূপমন্ডুকতা নস্যাৎ করে দেওয়ার স্পর্ধাময় উচ্চারণ 
বাঙালি বুঝতে শুরু করল এই গানের কথাগুলোকে, কথাগুলো যে নিজেরই বাস্তবমুখীনতার আয়নায় রক্তদাগে লেখা রয়েছে মানুষকে মিথ্যাচারের ভাবনায় বন্দী করে রাখছে না এই গানগুলো, দেখাচ্ছে সত্যের আঙ্গিককে একটি গানে পাই, 'গুণগানের হাজার বুলি,শুধুই সময় নষ্ট /আঁকছো ছবি সমস্ত দিন,রঙ সবই অস্পষ্ট /সুখের থেকেও হাজার গুণে দুঃখ অনেক ভালো /তাইতো বলি আমায় বরং/ঘেন্না করো ঘেন্না করো'
মহীনের প্রকাশভঙ্গিতে একটি গানে যেভাবে ফুটে উঠল শব্দশরীর, রঙ-তুলি দিয়ে আঁকা কোনো শিল্পীর সযত্নে গড়া নিখুঁত ক্যানভাস যেন সেটি, অথবা কোনো অসামান্য শিল্পীর ক্যামেরায় ধরা পড়া অনবদ্য কোনও শট রানওয়ে জুড়ে পড়ে থাকা শূণ্যতা, এলোমেলো চুলে কিশোরী আর উদ্বেগবিহ্বল চারণ, একটিমাত্র ফ্রেমে এই তিনটিরই জীবন্ত দাঁড়িয়ে থাকা যেনএরকম জীবন্ত ফ্রেম যে বাঙালির মনকে আগে নাড়া দেয়নি, তরুণ প্রজন্মের কাছে ঊষার আলোর ন্যায় ধরা দিল মহীন
পাহাড়ের সঙ্গে সঙ্গম করে ঝরণা আলতো চুমুতে তাদের ছুঁয়ে বেড়িয়ে যায় কুয়াশা কপালে স্নেহের পরশ দিয়ে যায় মেঘ আসামের ৩৩টি এডমিনিস্ট্রেটিভ ডিস্ট্রিক্টের মধ্যে একটি হল কার্বি এংলং, স্বপ্ননগরীই বলতে হয় বটে সেখানে আজও বন্দুকের নলের আওয়াজের চাইতে জোরে বেজে ওঠে হাইমু অপেরার সুররংবিননামে একটি ছবির কাজে গৌতমের সেখানে যাওয়া কিন্তু ওই ভবঘুরে মন কী আর শুধুমাত্র রেকি, ছবি, শ্যুটিং আবদ্ধিত হয়ে থাকতে পারে? এই খোলা বাতাস, সবুজে ঘেরা চারিদিক, পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে যাওয়া চা বাগানের সৌন্দর্যযে তাকে চঞ্চল করে তোলে প্রথমেই তাই হোটেল ছেড়ে থাকতে শুরু করেন গাছবাড়িতে, গায়ে মাখেন আদিবাসীদের গন্ধ এইসময় একবার হার্ট আক্রমণ করলেও, জোরপূর্বক বাড়ি অবধি পৌছোতে দেননি সে খবর ৯৯ সালেও আসেনি  টেলিফোন রিসিভারের পাশে বসে এই অপেক্ষা আসলে কার? মণির না মণি যাদের নয়নের মণি তাদের? যে ফোন কলের আশায় দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর সময়জুড়ে আমরা একমনে অপেক্ষা করি, ‘কখন তোমার আসবে টেলিফোন 
১৯৭৭ থেকে পরপর তিন বছরে তিনটে অ্যালবাম প্রকাশ করার পর তখনকার মত থেমে যায় 'মহীনের ঘোড়াগুলি' চলার পথকিন্তু আবার ১৯৯৫ তারা ফিরে আসেনএইসময় 'আবার বছর কুড়ি পরে'(১৯৯৬),'মায়া'(১৯৯৭),'খ্যাপার গান'(১৯৯৯) অ্যালবাম তিনটি প্রকাশ পায়মহীনের গানের চর্চা এসময় বাঙালির মুখে মুখেযে মহীনকে একদিন চলার পথে বাধাপ্রাপ্ত হতে হয়েছিল, সেই দলই সেদিন বাঙালিকে দিয়েছিল সমাজকে নতুন করে দেখার অনুপ্রেরণা, সুজীবিত থাকার অভিবাসনামহীনের নব পর্যায়ের একটি গানের কথায় কতটা ছিল নয়ের নবযুগের উচ্চারণ, 'পৃথিবীটা নাকি ছোটো হতে হতে/স্যাটেলাইট আর কেবিলের হাতে/ড্রয়িংরুমে রাখা বোকাবাক্সতে বন্দি/ঘরে বসে সারা দুনিয়ায় সাথে/যোগাযোগ আজ হাতের মুঠোতে/ঘুচে গেছে দেশ-কাল সীমানার গন্ডি/ভেবে দেখেছ কি/তারারাও যত আলোকবর্ষ দূরে/তারও দূরে/তুমি আর আমি যাই ক্রমে সরে সরে'
গানটি সেই সময়ে যে সকল শ্রোতাকে ভাবনায় নেশাতুর করে ফেলেছিল, সেকথা হয়ত আজ আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেইএই গানগুলি আজও আমাদের আচ্ছন্ন করে ফেলে, আজকের সমাজেও 'মহীনের ঘোড়াগুলি' গানের কথাকে ততটাই প্রাসঙ্গিক মনে হয় যতটা সেই সত্তরের দশকে গানের গতানুগতিক ভাবধারার পরিবর্তনের সময় ছিলতাই পরিশেষে বলা যায়, 'মহীনের ঘোড়াগুলি' তার নিজস্ব আঙ্গিকে আজও নতুনের সৃষ্টিতে ছুটে চলেছে



তথ্যসূত্র
তাপস দাস, কল্লোল দাশগুপ্ত ও রঞ্জনপ্রসাদ, অন্য মহীন অন্য ধারার গান, গুরুচন্ডা৯, ২০১৩, কলকাতা

Comments

পাঠকের পছন্দ