দেবযানী ভট্টাচার্য

চুক্তিনামা


এই দুধেভাতে  ঘরকুনো  জীবন আর নেওয়া যাচ্ছে না..গুনতি মেনে একুশদিল 
তালাচাবি দিয়েছি সমস্ত  পায়ের চিহ্নে- এবার এসপার নয় ওসপার।

তুমি কি আসবে  মৃত্যু?..কোনপথে আসবে তোমার আশ্চর্য  ফুলেল যৌবন নিয়ে! এই সাদামাটা
ডালভাত পুষ্ট দেহতরুতে আশ্রয় দেব তোমায় ,  বসবাস দেব...এক সমুদ্র অসুখের উথাল-পাতাল  দাও,লোনা জলের নিচে  খাবি খেতে খেতে দান চেলে দেখি ফের ভাসা হয় কিনা, আবার পায়ের চিহ্ন  বালিকাবেলার সেই আনন্দভূমিতে!

অসুখ , দরজার বাইরে পাহারায় থাকতে থাকতে তোমার রূপ ঝলসে যাচ্ছে  চৈত্রের খর রোদে, নীল আকাশ... সুবাসিত  হাওয়া ...পাখির ওড়াউড়ি ...প্রজাপতির রঙবাহার...কিছুতেই মন নেই তোমার.....তুমি কেবল মানব শরীর বুঝেছ...লোহার বাসর নেই আমাদের ...শতছিন্ন এ শরীর জাগলারের বল হতে হতে নিজের জন্য অজান্তেই খোলস বুনেছে রোজ, ভেদ করো তাকে।

আয়না দেখিনা কতদিন , জানি সিঁথির পাশে এখন রূপোরঙ তুলির আঁচড় , গমরঙা গালে বালিঝড়ের আবহবিকার...তোমার সাথে ভুলভুলাইয়ার অন্ধগলিতে খেলতে খেলতে শরীর জুড়ে আস্ত একটা হাওয়ামহলের তেষ্টা জমে উঠছে...দোহাই তোমার ...এ লুকোচুরি  থাক...চলো , তার চেয়ে তোমায় নিয়েই আকন্ঠ ঝাঁপ দিই  নয়ানজুলিতে…

তার আগে চুক্তিনামা হোক...মাটির গভীর গর্ভে মুখ গুঁজে  রয়ে যাব  লক্ষ বছর দুজনেই..

পৃথিবীর সব  দরজা খোলা থাকবে তত ততদিন.....হাতের উপর হাত রাখবে জীবন ....স্পন্দিত এ গ্রহ  আর আতঙ্কে মুখ ফেরাবেনা ...বল রাজি কী না..

রাত হলে চুপিসারে দোর খুলে দেব।

Comments

পাঠকের পছন্দ