সৌরদীপ চক্রবর্তী

কারাগারে রাজ্যপাট

 

গুমোট ঘরে কারাগার জীবন, 
খানিকটা জীবনের ডামাডোলের ভাঁজে 
গুছিয়ে নেওয়ার রংচটা সময়, 
মৃত্যু পরিবেশে মেতেছে ভবঘুরের 
এক চিলতে পৃথিবী। 
দিবারাত্রি মনের সাথে মনের খুনসুটি, 
পিডিএফ এর উপন্যাস আজ 
কলেজস্ট্রীটের বই পাড়া হয়ে 
সোজা আলো আঁধারির মোবাইলে। 
ঘ্যানঘ্যানে মায়ের বকুনিও নিত্য প্রয়োজনীয়, 
আসলে ব্যস্ত সময়ের ঘেরাটোপে 
ওই টুকুও তো পাওয়া হতো না যে। 
পাড়ার পুকুরে রোজকার কাঠের শ্রমিকদের
স্নানের ভিড় ডুমুরেরফুল, 
সেও আজ একা চোখ বুজে ল্যাদমগ্ন।
টুংটাং এস এম এস খুব আপন,
দূরত্ব বেড়ে যাওয়া মানুষ গুলো কাছে টানছে আজ,
অহেতুক প্রেমিকার দীর্ঘ কচকচানি 
বন্দীদশার নিত্য সঙ্গী। 
খবরের কাগজ মৃত্যুর বাতাবরণ নিয়ে আসছে, 
মৃত্যুর পরিসংখ্যানেরও বাজার দর সীমাহীন, 
বার্ধক্যতায় ভীত সর্বত্র।


কফি শপ থেকে শপিংমল ঘুম দিয়েছে
পুঁজিবাদের হাত থেকে, 
ফিকে রাজপথে মিছিলের চিহ্ন 
কবরে শুয়ে জন্নত পথে উদগ্রীব, 
নেতাদের মিথ্যেশ্রুতি স্তব্ধ, স্তব্ধ বিগ্রেডের মাঠ,
বিরিয়ানি - খিচুড়ির কাড়াকাড়ি ক্যাডারের স্মৃতিতেই বন্দীত।
ভাগাড়ে পড়ে থাকা মুরগীর ঠ্যাং 
ভিখিরির উপাদেয় খাদ্য, 
অনুদানের বিলি তে শয়ে শয়ে 
বোকা মানুষের ঢল,
মৃত্যুর আগে পেটে দু মুঠো ঠুসে
স্বস্তির নিঃশ্বাস। 
ফেসবুকবাসী পুরোনো ছবি আর ফুটেজই খুশি,
ওয়াটস অ্যাপ গুজবের কারখানা, 
ইনস্টাগ্রাম রোজনামচার সেলেবদের 
বেডরুম থেকে বাথরুমের আপডেটে সিদ্ধ হস্ত।

থাক সব, থেমে থাক সব,
মানুষ জিতুক মনুষ্যত্বের কাছে, 
স্বার্থপরতা আজ কয়েক আলোকবর্ষ দূরে, 
পৃথিবী দেখেছিলো মৃত্যুর মায়াজালে 
এক সুখময় নিপাট মানুষশ্রেণীর 
লড়াইয়ের জয়ের ধ্বজা।

Comments

পাঠকের পছন্দ